শনিবার, ২৮ Jun ২০২৫, ০৭:৪৭ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

মার্কিনে ক্ষমতার পরিবর্তন অনিশ্চয়তায় নেতানিয়াহুর নীতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত। মার্কিন মুল্লুকে ক্ষমতার হাতবদল বিশ্ব রাজনীতির উপর বরাবরই বেশ প্রভাব রাখে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকরা। ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্য এবং রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনার গতি কোন পথে পরিচালিত হবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতির বিপরীত পথেই যে ট্রাম্পের অভিমুখ নির্বাচিত হওয়ার আগে তা নিজেই স্পষ্ট করেছেন ট্রাম্প। বাইডেনের আমলে শুরু হওয়া যুদ্ধের ক্ষেত্রে ডনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে এমন যুদ্ধই হতো না। বিশ্ব জুড়ে প্রবল দাবি উঠলেও ফিলিস্তিন-ইসরাইল উত্তেজনা প্রশমনে বাইডেন প্রশাসন যে ব্যর্থ হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইলের প্রতি ট্রাম্পের নীতি কী হবে বা তার নীতি কি মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধের ইতি টানতে পারবে তা নিয়ে সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এক্ষেত্রে আরেকটি প্রশ্ন হচ্ছে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কি ট্রাম্পের কাছ থেকে বাইডেন প্রশাসনের মতোই সহযোগিতা পাবেন। প্রশ্নটা আরেকটু স্পষ্ট করে বললে দাঁড়ায়, নেতানিয়াহু কি ট্রাম্পের কাছ থেকে যা চাইবেন তাই পাবেন?

বিবিসি’র এক খবরে বলা হয়েছে, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। এরপর তিনি সেখানে মার্কিন দূতাবাসও স্থাপন করেন। জেরুজালেমে বসবাসকারী রাব্বি রাফায়েল শোর বলেন, ‘জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাসের মুখোমুখি বারটিকে ডেজা বু বলা হয়, আপনি আগে যা পান করেছেন এমন কিছুর মজাই রয়েছে এখানে। মার্কিন দূতাবাসের ফটকের বাইরে ইসরাইল ডনাল্ড ট্রাম্পকে দ্বিতীয় বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বাগত জানাতে আগ্রহী।’ ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন শোর। বলেন, ‘ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যের ভাষা বোঝেন। এখন ইরান কোনো কিছু করতে একাধিকবার ভাববে। আমি মনে করি যদি কমালা হ্যারিস নির্বাচনে জয়ী হতেন তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা নিয়ে আমাদের বেশ ভয়ের কারণ ছিল।
ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানানোর মধ্যে প্রথম সারির একজন হচ্ছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার টুইট বার্তায় তিনি বলেন, পুনরায় ফিরে এসে ইতিহাস সৃষ্টি করায় আপনাকে অভিনন্দন। এ ছাড়াও ট্রাম্পকে একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ইসরাইল তার ঘনিষ্ঠ মিত্র হোয়াইট হাউসের সঙ্গে আছেন।

ট্রাম্প তার আগের টার্মে ইসরাইলের পক্ষ নিয়ে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করে। বেশ কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠতা বাড়াতেও কাজ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। অন্যদিকে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে কয়েক দশকের মার্কিন নীতির বিপক্ষে অবস্থান নেন ট্রাম্প। বিশ্ব জুড়ে এর সমালোচনার ঝড় উঠলেও তাতে কর্ণপাত করেননি তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরাইলের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাইকেল ওরেন বলেছেন, ‘ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের সময় ইসরাইল বেশ উদ্বিগ্ন ছিল। তবে এবার আমরা আশা করছি যে, ট্রাম্প পুনরায় বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন। তিনি কীসের পক্ষে দাঁড়াবেন সে সম্পর্কে ইসরাইলের তীক্ষè দৃষ্টি রাখতে হবে।’ মাইকেল বলেন, প্রথমত যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত নতুন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ পছন্দ করেন না। কেননা, তিনি এ বিষয়টিকে বেশ ব্যয়বহুল মনে করেন। সম্ভবত ডনাল্ড ট্রাম্প দ্রুত গাজা যুদ্ধের ইতি টানতে ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানাতে পারেন। পশ্চিম তীর ইস্যুতে ট্রাম্প ইসরাইলের পক্ষাবলম্বন করেন না।

ট্রাম্পের এই নীতি তাকে নেতানিয়াহুর বর্তমান শাসক জোটের অতি-ডানপন্থি দলগুলোর সঙ্গে দ্বন্দ্বে ফেলতে পারে, যারা নেতানিয়াহুকে তাদের প্রত্যাখ্যান করা নীতি অনুসরণের জন্য সরকার পতনের হুমকি দিয়েছে। বিতর্কিত এসব ইস্যুতে মার্কিন মিত্রের বিপরীতে জোটের অংশীদারদের দাবি বেছে নেয়ার পক্ষেই সমর্থন রয়েছে নেতানিয়াহুর। মাইকেল ওরেন মনে করেন, নেতানিয়াহুকে অবশ্যই মার্কিন নতুন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভিন্ন পন্থা বেছে নিতে হবে। আগামী জানুয়ারিতে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর প্রথম সপ্তাতেই যদি তিনি নেতানিয়াহুকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান তাহলে তার তাই মেনে নেয়া উচিত।

ফিলিস্তিনের গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে ইসরাইল। তবে এতে বেশি প্রাণ হারিয়েছে বেসামরিক জনগণ। যার ফলে পৃথিবী জুড়ে ইসরাইল বিরোধী মনোভাব বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। মুসলিম দেশগুলোর বাইরেও ইসরাইলের বিপক্ষে রয়েছে বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ। যার ভিত্তিতে নির্বাচিত হওয়ার আগেই নিজের অবস্থান জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, যুদ্ধের বিপরীতে তিনি শান্তির পক্ষে। ইসরাইলের হাতে ধ্বংস হওয়া পরিবারগুলোর সদস্যদের দাবি ট্রাম্পের অবশ্যই যুদ্ধ বন্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION